top of page

ড. রফিকুল ইসলাম।। একটি ইতিহাস, নোবেল পুরস্কার ছিল তাঁর প্রাপ্য।। এম.কে. জাকারিয়া



এই মহান বিজ্ঞানীটি হচ্ছেন লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন রক্ষাকারী খাবার স্যালাইনের (Oral saline ) আবিস্কারক, এবং ICDDR,B( International Centre for Diarrhoeal Disease Research, Bangladesh) 'র সাবেক চিফ ফিজিশিয়ান ড. রফিকুল ইসলাম ।

এই রত্নকে ০.১% লোক চিনে কি না আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে ।

আর না চিনারও কথা। কারন কে বলবে উনার মহান অবদানের কথা দায়িত্ব নিয়ে, নিঃস্বার্থভবে, আমরা তো সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকি নিজেদেরকে নিয়েই ।

এদিকে তিনি সেলিব্রিটিও না আবার কোন রাজনৈতিক পরিচয়ও নাই উনার যে সবাই উনাকে চিনবে এক নামে ।

কিন্তু কত বড় মহান কাজ / সৃষ্টি করে গেছেন যে তিনি মানুষের জন্য তার ঋণ শোধ করা যাবে না কখনই ।

উল্লেখ্য যে ডায়রিয়া হলে আজ আর মারা যায় না কেউ। বাড়ির পাশের মুদি দোকান কিংবা সর্বত্রই পাওয়া যায় ওরস্যালাইন, রীতিমত জীবন বাঁচানো মহৌষধ!

অথচ এমন একটা সময় ছিল যখন এই ডায়রিয়াতেই মারা যেত লাখো মানুষ, উজাড় হয়ে যেত গ্রামের পর গ্রাম।

যাদের অবদানে আজ আপনি সহজেই স্যালাইন খাওয়ার মাধ্যমে ডায়রিয়া থেকে আক্রান্তকে বাঁচাতে পারছেন, তাদের মধ্যে একজন ড. রফিকুল ইসলাম।

তবে আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে পারি উনার জন্ম যদি ইউরোপ, আমেরিকা বা অন্য কোন উন্নত দেশে, এমনকি ইন্ডিয়াতেও হত তা হলে উনি নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হতেন অনেক আগেই, লাখ লাখ মানুষের জীবন রক্ষাকারী খাবার স্যালাইন (oral-saline) আবিস্কারের জন্য ।

যারা আমরা জানি না তাদের এবং বর্তমান প্রজন্মের জন্য সংক্ষিপ্ত আকারে বলছি এই মহান জনদরদী ব্যক্তিটি সম্পর্কে ।

ড. রফিকুল ইসলাম কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ।

এমবিবিএস পাশ করেন তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে, পরবর্তীতে তিনি ব্রিটেনে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঔষধ এবং স্বাস্থ্যবিধি (ট্রপিক্যাল মেডিসিন ও হাইজিন) বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করেন ।

তারপর তিনি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডাইরিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি ) এ যোগদান করেন এবং সেখানকার চিফ ফিজিশিয়ান থাকাকালীন ২০০০ সালে অবসরে যান তিনি ।

আইসিডিডিআরবিতে তিনি ওষুধ নিয়ে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালালেও তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ওআরএস।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বর্বর নরপিশাচদের চালানো গনহত্যার মুখে যখন লাখো মানুষ প্রাণ বাঁচানোর জন্য সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আশ্রয় নিচ্ছিল, তখন পশ্চিমবঙ্গে শরণার্থী শিবিরগুলোতে একবার মহামারী আকারে দেখা দিয়েছিল কলেরা।

কোনভাবেই এর বিস্তার রোধ করা যাচ্ছিল না। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ কলেরায় মারা যাচ্ছিল।

১৯৭১ এ ওয়াশিংটন ডেইলি নিউজে রিপোর্টটের শিরোনামই ছিল “600,000 of 5 million(500,00,00) Refugees Have died.

এর থেকেই বুঝতে পারা যায় যে কলেরায় মৃত্যুর হার কত ভয়াবহ ছিল তখন।

সেই মুহুর্তে এর একমাত্র চিকিৎসা ছিলো শিরায় দেওয়া স্যালাইন (ইন্ট্রাভেনাস)।

কিন্তু এ ধরনের স্যালাইনের সরবরাহ কম থাকায় ডাক্তার রফিকুলের উদ্ভাবিত ওরাল স্যালাইন বা খাবার স্যালাইনের মাধ্যমে অসংখ্য শরনার্থী প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছিল আল্লার রহমতে ।

এবং সম্পূর্ণভাবে রোধ করা গিয়েছিল অকাল মহামারী কলেরা ।

অসংখ্য রোগীর জীবন বাঁচানো এই ওআরএস একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পর শত্রুমুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃতি পায়।

পরে ধীরে ধীরে নানা উদ্যোগের মাধ্যমে মানুষের বাড়ি বাড়ি এ স্যালাইন পৌঁছে দেয় বাংলাদেশি এনজিও ' ব্র্যাক " ।

এ কারণে এটি “ঢাকা স্যালাইন” নামেও পরিচিতি পেয়েছিল।

আজ আর ডায়রিয়ার জন্য কাতারে কাতারে মানুষকে মারা যেতে হয় না।

এর পেছনে এই মহান বিজ্ঞানী ডঃ রফিকুলের অবদান অবিস্মরণীয়!

৫ মার্চ ২০১৮ সালে উনি মারা যান ঢাকাতে ।

কিন্তু দুঃখের বিষয় বিদেশ কেন বাংলাদেশও তাকে কোন ধরনের উল্লেখযোগ্য পুরস্কারে ভূষিত করা হয় নাই তার এই মহান কর্মকাণ্ডের জন্য ।

কত অকৃতজ্ঞ আমরা !!! গুণীজনকে সম্মান দিতে জানি না ।

যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ডঃ রফিকুল ইসলামকে আমরা স্মরণ করবো চিরকৃতজ্ঞতায়!

Deep respect & Hats off to the dedicated scientist Dr Rafiqul Islam, inventor of oral re hydration solution (ORS).

Thank you again for your great contribution to mankind .

For more details: https://www.thedailystar.net/backpage/oral-saline-inventor-no-more-1544038?fbclid=IwAR1uFgLvBJjQltZU8SLv_QSutE4twVvM_YQpKYD4yDESYpowAc4xeuVVwnA

**


Comments


পাঠক নিবন্ধন ফর্ম​

জমা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ!

লেখা প্রদানের জন্য মেইল করুন

banglakotha2011@gmail.com

©2025 by Banglakotha

Bangladesh

bottom of page