মিনু ও জল-পরী।। শাহ জালাল খান
- বাঙলাকথা
- Aug 6, 2021
- 2 min read
আয়না দেখে চেঁচায় মিনু
এত্ত আমার রূপ ,
রূপ বিকিয়ে গড়তে পারি
নগরের ধন কূপ ।
স্বামীর ঘরে ক্ষেপে মিনু
ঘোরায় হাতের লাঠি ।
ঘর ছাড়ে সে প্যাকেট পুরে ,
শখের গয়না গাঁটি ।
বাপ বললো, অবর বেলায়
কি যে আমি করি ,
মা বললো, বাদ দাও সব
ওর ঘাড়ে জল-পরী ।
হাত বাড়ালেই পরীর এখন
বন্ধু ছড়াছড়ি ,
শহর জুড়ে সুনাম ভারী
নটের কাঁচা কড়ি ।
নগর বাউল হয়ে ঘোরে
সন্ধ্যা বেলার রানী ,
ছতর আড়ে গতর জুড়ে
জোছনা মাখে ছানি ।
দিনে পিয়ে লাল পানি আর
রাতে সবুজ বারি ,
সুজন ছেড়ে করলো বরণ
কুজন কাঁড়ি কাঁড়ি ।
হঠাৎ সেদিন জবর খবর
ঘরের ঘেরা কাঁচে .
রাতের বেলায় সেথায় পরী
কাপড় ছেড়ে নাচে ।
মান্ ষে বলে মেয়েটির হায় ,
ভালোর ভাগে ক্ষিণ ,
শহর জুড়ে রটনা হলো
পরীর ঘাড়ে জ্বিন ।
জ্বিন ছাড়াতে পরীর বাড়ি
উঠলো নগর মালি ,
বললো পরী, আমায় সোজা
করবে ? গুঁড়ে বালি !
পরীর কিছু ভাইয়া ছিল ,
তাদের কাছে ছোটে ,
ধমকে ডাকে , আদর মেশায়
কেউ আসে না মোটে ।
বড়্ বাবুকে ডাকে পরী
ভাইয়া জ্বলদি আসো ,
ঘটা কোরে না, বললে সে দিন
বড্ড ভালবাস !
এই ভাইয়া , আমি কি ফোন
বন্ধ করে দিব ,
কথা বলো , নইলে কিন্তু
গলায় দড়ি দিব ।
ভাইয়া গুলো আর হাসে না
পরীর কথায় আর ভাসে না ,
দেখলো পরী ভাইয়া দারুণ
আসলো ছুটে না যে ,
এত্তবড় ছলার কলা
ভীষণ ভারি, বাজে !
অবশেষে পরীর বাড়ি
বাঁধলো হই চই ,
চেঁচায় পরী , বিপদ কালে .
মাম্ মা , তুমি কই !
মামমা বলে, শোনরে পরী
জাগায় আছি এই ,
ওঝার সামনে পাগলা ছুড়ি
কথা বলতে নেই ।
এক লাফেতে পরী বানু
উঠে মাচার পরে ,
কোথায় আমার চাচ্চু খালু
চোর ঢুকেছে ঘরে ।
আমরা চোর নইরে পরী
কালো রঙের ওঝা ,
ডাণ্ডা দিয়ে আণ্ডা খেলি
জ্বিনের করি সোজা ।
নাকের ভিতর নস্যি ঢালি
খাওয়ায় বরফ কুঁচি,
রাতের বেলায় ডিম থেরাপি
গরম গরম লুচি ।
দেও-দানব আর জ্বীন-পরীদের
ফেলে বাঁশের খাঁচে ,
গরম পানির বরফি খাওয়ায় ,
ভূত ছেড়ে সে বাঁচে ।
পরী শেষে বুঝতে পারে
তার দুঃখ কেউ ববে না
জামাই -তালোই কাজ হবে না
চোখের সামনে দিব্যি দেখে
এবার ঘাড়ের পরী ,
ঘাড় ছেড়ে সে , ওঝার বাড়ি
করছে গড়াগড়ি ।
জল-পরীটার বুকের ভিতর
ভাবনা গুলো মোদে ,
সব দুঃখ বিষের ফোঁড়া
আছড়ে পড়ে গোঁদে ।
(রচনা, ৬ আগস্ট, ২০২১ , ২২ শ্রাবণ ১৪২৮ শুক্রবার)
Komentáře