সততার মূর্ত প্রতীক সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী আলহাজ্ব মোঃ আনোয়ার হোসেন।। শেখ সিরাজুল ইসলাম
- শেখ সিরাজুল ইসলাম
- Sep 25, 2021
- 2 min read
আলহাজ্ব মোঃ আনোয়ার হোসেন। তিনি কালীকচ্ছ পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রথিতযশা শিক্ষক, বুজুর্গানে দ্বীন মরহুম মৌলভী আব্দুল করিম মাস্টারের ছেলে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার বেড়তলা গ্রামে ২৬ নভেম্বর ১৯৫২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অত্যন্ত অমায়িক, পরোপকারী, সদা হাস্যোজ্জ্বল ও পরহেজগার ছিলেন। তিনি কোরআন শিক্ষা পরিষদ ও মৌলভী আব্দুল করিম মাস্টার পাঠাগার ও প্রজ্ঞাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিদ্যানিকেতনের ভূমিদাতা। তিনি পরম শ্রষ্টার নৈকট্য লাভের সাধনা করে গেছেন জীবনব্যপী। বিশ্বব্রহ্মান্ডের একমাত্র অধিপতির সন্তুষ্টি অর্জনই ছিল তাঁর জীবনের ব্রত। তিনি পার্থিব জগতে স্রষ্টার বিধান অনুসরন করেই পাড়ি দিয়ে গেছেন কালের তরী। পরহেজগার এই মানুষটি সুসন্তান উপহার দিয়ে গেছেন সমাজকে। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও সত্য পথে, ন্যায়ের পথে,সুন্দরের পথে অবিচল থেকেছেন সারাজীবন। সৎ পথে থেকে তাঁর অক্লান্ত শ্রম-ঘামে সন্তানদের সমাজের তরে যোগ্য করে তুলেছেন প্রতিযোগিতার সমাজে। তাঁর জৈষ্ঠ্যপুত্র মোঃ জেহাদ উদ্দিন ১৯৯১ সালে কুমিল্লা বোর্ডে মানবিক বিভাগে সম্মিলিত মেধা তালিকায় প্রথম হয়েছিলেন, যিনি বর্তমানে অর্থ মন্ত্রলায়ের উপসচিব ও দেশের সর্বমহলে বিশিষ্ট গবেষক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হিসাবে পরিচিত অর্জন করেছেন। তাঁর কনিষ্ঠ ছেলে নাঈমুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে আরবী বিভাগে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়েছিলেন,বর্তমানে সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। কনিষ্ঠ কন্যা সাবরিনা শাওন সম্প্রতি রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হতে এম,বি,বি,এস উত্তীর্ণ হয়ে চিকিৎসা পেশায় যোগ দিয়েছেন। তাঁর অন্য সন্তানরাও শিক্ষা ও কর্মে মেধাবী। তাঁর জীবন সংগ্রাম যখন সাফল্যের মুখ দেখছিল,স্বার্থকতা যখন দরজায় কড়া নাড়ছিল,কঠোর সাধনার অর্জন যখন আনন্দ হয়ে ধরা দিয়েছিল ঠিক এমন সময়ে (১৪ জুলাই,বুধবার ১ঃ৫০) মৃত্যু এসে নিয়ে গেল অনন্তলোকে,সকলের চোখের আড়ালে,অন্যভূবনে! তিনি যে দীপ শিখা জ্বালিয়েছেন,জীবন বাঁকে যে কীর্তি রেখে গেছেন,জীবনের সুদীর্ঘ পথ-পরিক্রমায় মনুষত্বের যে চিহ্ন রেখে গেছেন, স্রষ্টা ও সৃষ্টিকে ভালোবেসে গিয়েছেন তা তাঁর প্রিয়জনেরা,পড়শীরা অনুভব করছেন। আসলে তাঁর অসাধারন জ্ঞান গরিমায় তিনি সময়মতো অনুধাবন করেছিলেন দুনিয়ার জীবনের অসারতা। আর এই উপলব্ধি তাঁকে দিয়েছে সহজ-সরল,সত্য-সুন্দর পথের দিশা। অসার এই পৃথিবীর ধুলি কণা ছেড়ে তিনি পাড়ি দিয়েছেন অনন্তপথে। তাঁর পরম মমতা ও যত্নে গড়া গুলবাগিচার ফুটন্ত ফুলেরা সৌরভ ছড়াবে কালে-কালে, দিক-দিগন্তে। সেই সাথে তিনিও অক্ষয় হয়ে থাকবেন নিরবে,নিভৃতে,অন্তরে-অন্তরে, এই মায়াবী প্রান্তরে।
লেখক: বিশিষ্ট সাংবাদিক। বাংলাদেশ প্রতিনিধি, মানুষ পত্রিকা, আগরতলা, ত্রিপুরা, ভারত।
Comments